হিউমিডিফায়ার; কি এবং কেন এটি আপনার প্রয়োজন
আমাদেরকে চারপাশ থেকে ঘিরে আছে বাতাস। এই বাতাস থেকে আমরা বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় রসদ নেই। অক্সিজেন ছাড়া যেমন আমাদের চলে না তেমন আরও একটি উপাদান রয়েছে বাতাসে যেটা ছাড়া আমাদের শরীরে নানান রকম উপসর্গ দেখা দেয়। তা হল, জলীয় বাস্প। বাতাসে যদি আর্দ্রতা বা জলীয় বাস্পের পরিমাণ কম থাকে তাহলে রোদের তাপে শরীরের চামড়া পুড়ে যায়। আমাদের দেশে সাধারণত যারা উত্তরাঞ্চলে বসবাস করেন তারা এই সমস্যার মুখোমুখি হন খুব বেশি। তবে শুধু যে আর্দ্রতার কারণে চামড়া পুড়ে যাওয়া সংক্রান্ত সমস্যা হয় তা কিন্তু না। আরও নানান রকম সমস্যা দেখা দিতে পারে বাতাসে পর্যাপ্ত জলীয় বাস্পের অভাবে। সেগুলো সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হলঃ
বাতাসে জলীয় বাস্পের অভাবে সৃষ্ট সমস্যা
প্রথমত, আমাদের শ্বসনতন্ত্র অর্থাৎ আমাদের নাকের ভেতর রয়েছে আর্দ্র মেমব্রেন। এই মেমব্রেনের কাজ হল ধুলাবালি, ময়লা, ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া ইত্যাদি যদি আপনার ফুসফুসে প্রবেশ করতে যায় তখন তাদের বাঁধা দেয়া। যখন বাতাসে পর্যাপ্ত জলীয় বাস্পের অভাব দেখা দেয় তখন নাকের ভেতরের এই ঝিল্লীগুলোও শুকিয়ে যায়। তখন আর সে কোনকিছুকে ফুসফুসে ঢুকতে বাঁধা দেবার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে।
দ্বিতীয়ত, কম জলীয় বাস্পের ভেতরে নিঃশ্বাস নিলে নাকের ভেতরের অংশ শুকিয়ে যায়। তখন নাকের ভেতর খসখসে ভাব তৈরি হয় এবং নাক প্রচুর চুলকাতে থাকে। এমনকি যাদের অ্যালার্জির সমস্যা খুব বেশি তাদের এরকম চুলকাতে চুলকাতে ফুলে উঠে নাকের পথ বন্ধও হয়ে যেতে পারে।
তৃতীয়ত, বাতাসে যখন আর্দ্রতা কমে যায় তখন শরীরের চামড়াতে নানান উপসর্গ দেখা দেয়। শীতকালে ঠোঁট বা পায়ের গোড়ালি ফেটে যায় না এমন মানুষ আমাদের দেশে খুব কমই পাওয়া যাবে। এটা কেন হয় জানেন তো? ওই আর্দ্রতার অভাব। অতিরিক্ত শুষ্ক বাতাসে বেশি সময় থাকলে শরীরের চামড়া শুকিয়ে যেতে থাকে। পরবর্তীতে ধাপে ধাপে চুলকানি, মরা চামড়া ওঠা, এবং অস্থিসন্ধিতে চামড়া শুকিয়ে টানটান হয়ে যাওয়ার মত ঘটনা ঘটতে পারে। এই শুষ্ক বাতাসের কারণে শরীরে অ্যাকজিমা বা অ্যাকনে হওয়াও বিচিত্র নয়। সাথে খুশকি তো আছেই।
এ তো গেলো স্রেফ শারীরিক বিষয়াবলী। এর বাইরেও রয়েছে অনেক সমস্যা। যেমন, আপনার ঘরের বাতাসে যদি জলীয় বাস্পের পরিমাণ কম থাকে তখন এই শুষ্ক বাতাস চেষ্টা করে আশেপাশের সবকিছু থেকে আর্দ্রতা টেনে নিতে। তাতে করে আপনার আসবাবপত্র বা আপনার দরজা-জানালার কাঠে চিড় ধরতে পারে। এছাড়াও আপনার ঘরে রাখা বইপত্র, দামী বা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র হয়ে উঠতে পারে ভঙ্গুর।
এসব শুনে নিশ্চয়ই ভাবছেন, এমন কি উপায় আছে যা দিয়ে এসবের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া যায়? চিন্তার কোন কারণ নেই। উপায় আছে। এবং তার নাম হিউমিডিফায়ার। সোজা বাংলায় বলতে গেলে বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ বাড়াবার যন্ত্র। চলুন বিশদভাবে জেনে নেয়া যাক এর সম্পর্কে।
হিউমিডিফায়ার পরিচিতি
হিউমিডিফায়ার হচ্ছে এমন এক যন্ত্র যার মাধ্যমে বাতাসে জলীয় বাস্পের পরিমাণ বৃদ্ধি করা যায়। সহজ করে বলতে গেলে, এটা হচ্ছে একটি ছোট্ট মেশিন এবং একটি পানি ধারণের পাত্রের সমষ্টি। পাত্রটিতে পানি দেয়া হয় এবং পরে এর মুখ আটকিয়ে মেশিনটি অন করে দেয়া হয়। মেশিনের কাজ হচ্ছে পাত্রের পানিকে সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম পানির কণা বানিয়ে বাতাসের সাথে মিশিয়ে দেয়া। আপনার যদি সেলুনে অথবা পার্লারে যেয়ে কাজ করাবার অভিজ্ঞতা থাকে তাহলে আপনার বুঝতে খুবই সুবিধা হবে। ওখানে আমরা দেখি না, যে একটা বোতল থেকে স্প্রে করে আমাদের মুখে বা মাথায় পানি ছিটানো হচ্ছে? এই হিউমিডিফায়ারও ঠিক সেই একই কাজ করে। শুধু পার্থক্য হচ্ছে ওটাতে হাতে করে চাপ দেয়া লাগে, আর এখানে মেশিনের সাহায্যে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজটি করা হয়।
উপকারিতা
হিউমিডিফায়ার বা জলীয় বাস্প নিক্ষেপকারী যন্ত্রের আকার খুব ছোট হলেও এর উপকারিতার তালিকা কিন্তু মোটেও ছোট নয়। নিচে হিউমিডিফায়ারের কিছু উপকারিতা তুলে ধরা হলঃ
- এটি আমাদেরকে সুস্থ্য থাকতে সহায়তা করে, ঠাণ্ডাজনিত সমস্যা এবং ফ্লু এর আক্রমণ থেকে দূরে রাখে।
- উচ্চমাত্রার জলীয় বাস্পের উপস্থিতি শ্বসনতন্ত্রের প্রদাহ প্রশমনে সহায়তা করে।
- যাদের অ্যালার্জি, ঠাণ্ডাজনিত সমস্যা, বা শ্বাসকষ্ট আছে তাদের ঘরে হিউমিডিফায়ার থাকলে তার দ্রুত সেরে ওঠে।
- রাতের নিরবিচ্ছিন্ন ঘুমের জন্য এটি খুবই সহায়ক।
- চামড়ার শুষ্কতা দূর করে।
- আপনার চুল এবং স্ক্যাল্প ভালো রাখে।
- আপনার পোষা প্রাণীদের ভালো রাখে।
- ঘরে রাখা গাছপালাগুলোকে ভালো রাখে।
- ঘরের আসবাবপত্র, জানালা-দরজা, এবং অন্যান্য কাঠের জিনিসপত্রকে ভালো থাকতে সহায়তা করে।
হিউমিডিফায়ার কত ধরণের হয় এবং আমার জন্যে কোনটি ভালো হবে?
পড়ার এই পর্যায়ে উপরের এই প্রশ্নটি আপনার মনে আসতেই পারে। তাই আপনার সুবিধার্থে বিষয়গুলো এখানে পরিষ্কার করে দিচ্ছি। আসলে হিউমিডিফায়ার হয় ৫ ধরণের। এগুলোর নাম নিচে দেয়া হলঃ
১. সেন্ট্রাল হিউমিডিফায়ার
২. আলট্রাসনিক হিউমিডিফায়ার
৩. ইম্পেলার হিউমিডিফায়ার
৪. ইভ্যাপোরেটর এবং
৫. ষ্টীম ভ্যাপারাইজার
এই শ্রেণীবিভাগগুলো আসলে এসেছে এদের কার্জপদ্ধতির উপর ভিত্তি করে। কার্জকারিতার উপর নয়। আসলে আপনি কোনটি ব্যাবহার করবেন সেটি নির্ভর করে আপনি কতখানি জায়গা আর্দ্র করতে চাইছেন তার উপরে। যেমন: আপনি যদি আপনার বড় লিভিং রুম বা আপনার পুরো ঘর আর্দ্র করতে চান তাহলে নিচের এই মডেলগুলো বেছে নেয়া আপনার জন্য ভালো হবে।
প্রোডাক্ট লিঙ্কঃ http://www.shadmart.com/products/69266028178.html
মূল্যঃ ৩০৬০ টাকা ।
আশা করি এ সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য সফলভাবে আপনাদের জানাতে পেরেছি। তবু আমরা চাই আপনাদের সম্পূর্ণ সহায়তা দিতে। তাই যদি কোন প্রশ্ন বা কোন কৌতূহল থাকে তাহলে নির্দ্বিধায় আমাদের সাথে যোগাযোগের জন্য কল করুন – +8809678222333 এই নাম্বারে। অথবা আমাদের ইমেইল করুন [email protected] এই ঠিকানায়। এছাড়াও আপনি সরাসরি চলে আসতে পারেন এই ঠিকানায়-
দোকান নং – ৪০, তৃতীয় তলা, ইউ, এ, ই মৈত্রী কমপ্লেক্স
২৩৪, কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউ, বনানী, ঢাকা – ১২১৩
2 comments
হিউমিডিফায়ার কতো ওয়াট বিদ্যুতে চলে ? কেননা বিদ্যুৎ বিলটা মাথায় রাখতে হবে ।
ডি হিউমিডিফায়ার সম্পর্কে এরকম বিস্তারিত লিখলে উপকৃত হতাম।
কোথায় পাওয়া যাবে এবং ব্যবহার বিধি সহ। ধন্যবাদ।